‘বিজয়ী অথবা শহীদ’ পোস্ট দিয়ে নিহত সেই রাকিবের বাড়িতে সমন্বয়ক দল

 


সরকার পতনের কয়েক ঘণ্টা আগে ‘বিজয়ী অথবা শহীদ’ পোস্ট দিয়ে মিছিলে নেমে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র রাকিব হোসেন রাজিব। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জে এসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দল। 


রোববার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ও সমন্বয়ক নাজমুল আহসান এবং সহ-সমন্বয়ক শাহরিয়ার সাকিবের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাবুগঞ্জ উপজেলার মানিককাঠী গ্রামে আসে। এ সময় তারা রাকিব হোসেন রাজিবের কবর জিয়ারত করেন এবং তার পরিবারে সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় রাকিবের পক্ষে একটি হত্যা মামলা দায়ের ও মামলা পরিচালনার জন্য রাকিবের বাবা আলমগীর হোসেন এবং বড় ভাই আবুল কালাম হোসেনের অনুমতি নেন তারা। এছাড়াও সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিতব্য একটি শোক ও স্মরণসভায় যোগদানের জন্যেও তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক নাজমুল আহসান বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রাকিবের পরিবারের খোঁজখবর নিতে ৮ জনের একটি টিম যশোর থেকে নড়াইল হয়ে বরিশাল এসেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট চারজন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন। আমরা প্রত্যেক শহীদের বাড়িতে যাচ্ছি এবং তাদের পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নিচ্ছি।’ 


তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শহীদ রাকিবসহ প্রত্যেক শহীদের পক্ষ হয়ে আলাদা আলাদা হত্যা মামলা দায়ের করবো। তারা যে থানা এলাকায় শহীদ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট সেই থানায় মামলা করার জন্য আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়াও তাদের স্মরণে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শোক ও স্মরণসভার আয়োজন করতে যাচ্ছি। সেখানে ৪ শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা ও আর্থিক অনুদান বিতরণ করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তাদের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের অনুমতি নিতেই মূলত আমাদের এই সফর।’


প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুকে ‘বিজয়ী অথবা শহীদ’ পোস্ট দিয়ে মিছিলে নামেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র রাকিব হোসেন রাজিব। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখী ওই মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে এলে কোনো ধরনের বাঁধা কিংবা উস্কানি ছাড়াই মিছিল লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় পুলিশ। এতে মিছিলের সামনের সারিতে থাকা রাকিবসহ ৫-৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মিছিলের একটু পেছনে থাকা রাকিবের দুই বন্ধু এ সময় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই রাকিবের মৃত্যু হয়।